অভীক পুরকাইত,কলকাতা: প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যুর পর থেকেই সংবাদের শিরোনামে রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। নয়া উপাচার্য দায়িত্ব গ্রহণ করার পরেই অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটিকে নিয়ে বৈঠক করেছিলেন। ইউজিসি-র গাইডলাইন মেনে এই ধরনের ঘটনায় কী কী করতে হবে, সেই বিষয়ে কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন কমিটিকে। কিন্তু তারপরেও শান্ত হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়। এখনও পর্যন্ত ক্যাম্পাসকে র্যাগিংমুক্ত করার লক্ষ্যে আন্দোলন চালাচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তারই মধ্যে বুধবার নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়াল বিশ্ববিদ্যালয়ে।বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি রক্ষা করতে ফোর্স মোতায়েন করার ইচ্ছা প্রকাশ করে হঠাৎ বুধবার দুপুরে ভারতীয় সেনার এম্বলেম লাগানো পোশাকে হাজির হন ২৫-৩০ জন। তাদের তরফে একজন গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও বলেন। তারা জানান, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আভ্যন্তরীণ সমস্যার কথা জেনে তারা এসেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি রক্ষার্থে যদি তাদের বাহিনী ব্যবহারের প্রয়োজন হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে তারা পরিষেবা দেবেন। মানবাধিকার রক্ষার কাজ করলেও তাদের এই সংস্থা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনে কাজ করে বলেই দাবি করেছিলেন তারা।
সংবাদমাধ্যমের তরফে তাদের এই পোশাকের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলেই, বেরিয়ে আসে আসল সত্য। কখনও তারা আন্তর্জাতিক সংগঠন, কখনও বা মানবাধিকার কমিশনের সদস্য, কখনও আবার NGO, এই রকম বিভিন্ন দাবি করতে থাকেন তাঁরা। তাদের কাঁধে WHRPF লেখা ইনসিগনিয়া ব্যবহার করা থাকলেও, তাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কিংবা তাদের স্বীকৃতি কারা দিয়েছেন, সেই বিষয়ে কোন স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি তারা।
ইন্ডিয়ান আর্মি লেখা পোশাক কেন তারা ব্যবহার করছেন, কোন উত্তর দিতে পারেননি তারা। বাহিনীর সদস্যদের জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, এটি একটি চম্পাহাটির NGO, তাদের এই সংগঠনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ৩ মাসের ট্রেনিংয়ের পর তাদের পুলিশে কাজ দেওয়া হবে, তাই তারা এসেছেন।
শেষমেষ ছাত্রছাত্রীরা তাদের ঘিরে ধরলে পালিয়ে যান সবাই। সংস্থার মালিক চাপের মুখে কার্যত স্বীকার করে নেন, এই পোশাক ব্যবহার ভুল হয়েছে তাদের। বুধবারের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে।